বাংলাদেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের লক্ষ্য পরিচালিত ক্যাম্পেইনে ডেভিড বার্গম্যান ও তাসনিম খলিল পরিচালিত নেত্র নিউজ নতুন এক সংবাদ উপস্থাপন করেছে। যেখানে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজেরিকের কাছে নেত্র নিউজের এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে এবং তার প্রতি উত্তরে তিনি জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদন্ত করা উচিত।
কিন্তু তথ্য বিকৃত করতে সিদ্ধহস্ত নেত্র নিউজের তাসনিম এবং বার্গম্যান। তারা নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও বিভিন্ন সংবাদের মাধ্যমে এটি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে যে, অভিযোগগুলো নিয়ে জাতিসংঘ তদন্ত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, যা একেবারেই সত্য নয়। ডুজেরিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলতে বুঝিয়েছে, বাংলাদেশের সরকারকে, যাদের এ বিষয়ে তদন্তের এখতিয়ার রয়েছে। কেননা জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা হিসেবে তিনি খুব ভালো করেই জানেন, নিজ এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত প্রদানের ক্ষমতা রাখে না জাতিসংঘ বা তার কর্মকর্তাবৃন্দ। বরং তিনি জানিয়েছেন, আল জাজিরার অভিযোগ যদি সত্য হয় তাহলে ইসরাইল থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কোন যন্ত্র কিনে থাকলে তা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের জন্য ব্যবহার হচ্ছে কিনা, তা জাতিসংঘ খতিয়ে দেখবে।
কিন্তু নেত্র নিউজ তার বিকৃত তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে বলার চেষ্টা করেছে জাতিসংঘের কর্মকর্তাবৃন্দ আল জাজিরার তৈরি করা গুরুতর অভিযোগ আমলে এনে বৈশ্বিক ভাবে তদন্তের আহ্বান করবে বলে জানিয়েছে!
সবচাইতে মজাদার বিষয় হলো ডুজেরিক তার যেই প্রেস নোট জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে সেখানে বাংলাদেশের কোন নাম নেই। বরং সেখানে জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো সম্পর্কেও কিছু বলা হয়নি।
এর মাধ্যমে আরো একবার নেত্র নিউজের উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশের ঘটনা নগ্ন ভাবে প্রকাশিত হয়েছে যার মূল লক্ষ্য ছিলো বাইডেন প্রশাসনের অধীনে মার্কিন সেনাবাহিনীর সঙ্গে জেনারেল আজিজের সাক্ষাৎ বাতিল করা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বাতিল হয়নি। বরং তাদের বৈঠক যথা সময়েই হচ্ছে।
এরপর নেত্র নিউজ হতাশ হয়ে কিছু মানবাধিকার সংগঠনের দ্বারস্থ হয়েছে যারা সর্বদা বাংলাদেশকে নিয়ে নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করে এসেছে। জেনারেল আজিজের সঙ্গে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সাক্ষাৎকার বাতিল না হওয়ায় ক্ষমতার পটপরিবর্তনের জন্য ষড়যন্ত্র করে যাওয়া বার্গম্যান-খলিল সিন্ডিকেট বেশ হতাশ হয়েছে এ বিষয় বলার অপেক্ষা রাখে না। এই সঙ্গে এর মাধ্যমে আরো একবার প্রমাণ হয়েছে, ট্রাম্প ও বাইডেন প্রশাসনের মধ্যে যতই সমস্যা থাকুক না কেনো, বাংলাদেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তনে তাদের কোন সম্মতি নেই।
সেই সঙ্গে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই, এমন অভিযোগও এখন এই সিন্ডিকেট করতে পারছে না। কেননা আল জাজিরাকে বাংলাদেশে ব্লক করে দেয়া হয়নি এবং বাংলাদেশে সকলে আল জাজিরার ডকুমেন্টারি দেখতে পারছে।
অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোও ডুজেরিকের মন্তব্য নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
সুতরাং ‘মিডিয়ার মুখবন্ধ রাখা হয়েছে’ এমন দাবি করছেন যে সকল সম্পাদকেরা তাদের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। সেগুলো বন্ধ করার জন্য সরকারের তরফ থেকে কোন চাপ প্রয়োগ করা হয়নি, সে কারণেও হয়ত বার্গম্যান-খলিল সিন্ডিকেট কিছুটা অসন্তুষ্ট রয়েছে।
কিন্তু আল জাজিরায় প্রকাশিত সংবাদের যে বিশ্লেষণ বাংলাদেশের গণমাধ্যমে উঠে এসেছে এবং এই ডকুমেন্টারির তথ্য ঘাটতি নিয়ে যে প্রশ্ন করা হচ্ছে তা বেশ হতভম্ব করেছে এই সিন্ডিকেটকে।
অদ্ভুত হলেও সত্য যে আল জাজিরা এখন দাবি করছে জাতিসংঘ বাংলাদেশে হওয়া দুর্নীতি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘে এ বিষয়ে কোন সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি।
তবে কী আমাদের এখন বিশ্বাস করতে হবে যে, জাতিসংঘে তদন্তের নির্দেশ দিলেও এ বিষয়ে কোন সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে না এবং তারা এমন কোন বক্তব্য দিলে তা বিশ্বের আর কোন গ্রহণযোগ্য গণমাধ্যম প্রকাশ করবে না! এই ধরণের জিজ্ঞাসাগুলো আল জাজিরার বস্তুনিষ্ঠতা, বিশ্ব গণমাধ্যমে অবস্থান এবং নেতিবাচক অবস্থানে থেকে সংবাদ পরিবেশনের বিষয়গুলোকে আরো একবার প্রশ্নবিদ্ধ করে।
#NetraNews #DavidBergman #TasnimKhalil