গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনেই তারা মহামন্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছেন।
এমনকি অন্যায়ভাবে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রও করেছেন তারা। এমন অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় সম্মিলিত গণতান্ত্রিক ব্যাবসায়ী ঐক্য পরিষদ।
শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে স্থানীয় পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির পরিচালক ও সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: মকছুদার রহমান শাহান।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের ২৫ ডিসেম্বর (আজ) গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল।
উক্ত নির্বাচনে শাহান, নওশের,সবুর,মিলন পরিষদে প্যানেল গঠন করেছি।আমাদের প্রতিদ্বন্ধী সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি তার নেতৃত্বে একটি প্যানেল গঠন করেছেন।
নির্বাচনী তফশিল অনুযায়ী চলতি বছরের ৩ নভেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়। ৪ নভেম্বর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত খসড়া ভোটার তালিকা সম্পর্কে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে আপত্তি দাখিলের শেষ সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
উপরোক্ত সময়ে চেম্বারের এ্যাসোসিয়েট সদস্য নূর এ হাবীব টিটন ও ইমরান কবির শামীম এ্যাসোসিয়েট ভোটার তালিকার উপর দুটি আপত্তি দাখিল করেন।
গত ১৩ নভেম্বর উভয় পক্ষের শুনানির মাধ্যমে নিস্পত্তি অন্তে ১৬ নভেম্বর বৈধ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে গণ্য হয়ে প্রতীক বরাদ্দ হলে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা শুরু হয়।
কিন্তু গত ৫ ডিসেম্বর নির্বাচনী আপিল বোর্ড ও এফবিসিসিআই এর আর্বিটেশন ট্রাইব্যুনালকে পাশ কাটিয়ে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে চেম্বার পরিচালক রকিবুল হাসান সুমন গাইবান্ধা চেম্বারের সচিবসহ ১২ জনকে বিবাদী করে ভোটার তালিকায় ভূয়া ভোটার রয়েছে মর্মে রিট পিটিশন দাখিল করেন।
অথচ ৪ নভেম্বর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত খসড়া ভোটার তালিকা সম্পর্কে আপত্তি দাখিলের সময় নির্ধারিত থাকলেও তিনি কোনো আপত্তিপত্র দাখিল করেননি।
এদিকে ১৬ নভেম্বর চুড়ান্ত বৈধ ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ১৮ নভেম্বর তিনি ভোটার তালিকায় একটি আপত্তিপত্র গাইবান্ধা চেম্বারের সচিবের নিকট প্রদান করেন এবং ৯ নভেম্বর আপত্তিপত্রটি গ্রহন হয়েছে মর্মে সচিবের স্বাক্ষর চান।
সচিব এতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে তাকে ভয় ভীতি দেখিয়ে বর্তমান সভাপতি ও প্রতিদ্বন্দী প্যানেলের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম শান্ত ও তার লোকজন অন্যায়ভাবে বল প্রয়োগ করে সচিবকে ১৮ নভেম্বর প্রদানকৃত আপত্তিপত্রে ৯ নভেম্বরে প্রাপ্ত হয়েছে উল্লেখ করে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে এবং স্বাক্ষরিত পত্র দ্বারা ৫ ডিসেম্বর মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দাখিল করা হয়। নম্বর ১১৬৯৬/২১।
পরে আদালত আগামী ৬ মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গাইবান্ধা চেম্বারের নির্বাচন ও চেম্বারকে গতিশীল রাখার জন্য চেম্বার সচিব ১৩ ডিসেম্বর মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের নিমিত্তে পিটিশন দাখিল করেন।নম্বর ৭৩১/২১।
পরে আদালত উভয় পক্ষের শুনানি অন্তে রকিবুল হাসান সুমনকে ৩০ দিনের মধ্যে এফবিসিসিআই এর আর্বিটেশন ট্রাইব্যুনালে উল্লেখিত বিষয়ে আবেদনের নির্দেশ প্রদান করেন এবং আবেদন প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালকে তাহা নিস্পত্তি করার আদেশ প্রদান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত ও নিজেদের প্যানেলকে নির্বাচনে অবৈধভাবে বিজয়ী করার উদ্দেশ্যে নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক সাব কমিটির আহবায়ক ও চেম্বারের সহ-সভাপতি কামাল হোসেন এবং চেম্বার সভাপতি শহিদুল ইসলাম শান্ত মিলিতভাবে বৈধ কাগজপত্র বিহীন বেশ কিছু সংখ্যক সদস্য ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন।
এরপরেও সাধারণ ব্যাবসায়ীদের ভোট, আস্থা সমর্থন না পাবার আশায় পরাজয় জেনে রকিবুল হাসান সুমন ভোটার তালিকার উপর আপত্তি দাখিলের নির্ধারিত সময় পার হবার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে আদালতে মামলা দায়ের করে ভোটারবৃন্দের ভোটাধিকার হরন পূর্বক নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করেন।
ব্যাবসায়ীরা চেম্বার অব কমার্সকে দূর্নীতিবাজ ও ক্ষমতালোভী মুক্ত ব্যাবসায়ী বান্ধব চেম্বার গঠনে সাংবাদিকদের সহযোগীতা কামনা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সম্মিলিত গণতান্ত্রিক ব্যাবসায়ী ঐক্য পরিষদ অর্ডিনারী গ্রুপের শাহান, নওশের, সবুর মিলন পরিষদের সদস্য সরদার মো: শাহীদ হাসান লোটন, নওশের আলম, আলহাজ্ব জিয়াউল ইসলাম মিঠু, আলহাজ্ব আব্দুস সবুর সরকার, মশিউর রহমান উজ্জ্বল, মোস্তাক আহমেদ রঞ্জু, সাহিদাত দোহা চৌধুরী সুমন, আলহাজ্ব খান মো: সাইদ হোসেন জসিম, আলহাজ্ব সামিউল হুদা সুমেল, আব্দুর রউফ মিয়া, অনুপ সাহা সহ অন্যরা।
এছাড়া এ্যাসোসিয়েট গ্রুপের শাহান, মিলন পরিষদের সদস্য তৌহিদুর রহমান মিলন,দীপংকর সাহা বাপ্পা, হাসান মাহমুদ জনি, ইমরান কবির শামীম, শওকত মির্জা রোস্তম, আবু সাফি মো: তাইমুর রহমান রিমেল সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।